জেনে নিন : কি কি কাজ করলে ওজু ভেঙ্গে যায় ?

আমরা নামাজ পড়ার পুর্বে পবিত্রতা অর্জন করে থাকি। কারণ পবিত্র না হয়ে নামাজ পড়া যাবে না। এই পবিত্রতা অর্জনের জন্য আমরা ওজু করি। কিন্তু আমরা হয়তো অনেকেই জানি না যে কি কি কাজ করলে আমাদের ওজু ভেঙ্গে যাবে।

প্রথমত ওজু ভঙ্গের কারন হচ্ছে ৭টি : যথা :

1 - প্রস্রাবের ও পায়খানার রাস্তা দিয়ে কোনো কিছু বের হওয়া

দলিল :

1 -  یٰۤاَیُّہَا الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡۤا اِذَا قُمۡتُمۡ  اِلَی الصَّلٰوۃِ فَاغۡسِلُوۡا وُجُوۡہَکُمۡ وَ اَیۡدِیَکُمۡ  اِلَی الۡمَرَافِقِ وَ امۡسَحُوۡا بِرُءُوۡسِکُمۡ وَ اَرۡجُلَکُمۡ  اِلَی الۡکَعۡبَیۡنِ ؕ وَ اِنۡ کُنۡتُمۡ جُنُبًا فَاطَّہَّرُوۡا ؕ وَ اِنۡ کُنۡتُمۡ مَّرۡضٰۤی اَوۡ عَلٰی سَفَرٍ  اَوۡ جَآءَ  اَحَدٌ مِّنۡکُمۡ  مِّنَ الۡغَآئِطِ اَوۡ لٰمَسۡتُمُ النِّسَآءَ  فَلَمۡ  تَجِدُوۡا مَآءً فَتَیَمَّمُوۡا صَعِیۡدًا طَیِّبًا فَامۡسَحُوۡا بِوُجُوۡہِکُمۡ وَ اَیۡدِیۡکُمۡ مِّنۡہُ ؕ مَا یُرِیۡدُ اللّٰہُ لِیَجۡعَلَ عَلَیۡکُمۡ مِّنۡ حَرَجٍ وَّ لٰکِنۡ یُّرِیۡدُ لِیُطَہِّرَکُمۡ وَ لِیُتِمَّ نِعۡمَتَہٗ عَلَیۡکُمۡ لَعَلَّکُمۡ تَشۡکُرُوۡنَ ﴿۶﴾
ইয়া আইয়ূহাল্লাযীনা আ-মানূইযা-কুমতুম ইলাসসালা-তি ফাগছিলূউজূহাকুম ওয়া আইদিয়াকুম ইলাল মারা-ফিকিওয়ামছাহূবিরুঊছিকুম ওয়া আরজুলাকুম ইলাল কা‘বাইন ওয়া ইন কুনতুম জুনুবান ফাততাহহারূ ওয়া ইন কুনতুম মারদা-আও ‘আলাছাফারিন আও জাআ আহাদুম মিনকুম মিনাল গাইতিআও লা-মাছতুমুন নিছাআ ফালাম তাজিদূমাআন ফাতাইয়াম্মামূসা‘ঈদান তাইয়িবান ফামছাহূবিউজূহিকুম ওয়া আইদীকুম মিনহু মা-ইউরীদুল্লা-হু লিইয়াজ‘আলা ‘আলাইকুম মিন হারাজিওঁ ওয়ালা-কিইঁ ইউরীদুলিইউতাহহিরাকুম ওয়ালিইউতিম্মা নি‘মাতাহূ‘আলাইকুম লা‘আল্লাকুম তাশকুরূন।
অর্থ: হে মু’মিনগণ! যখন তোমরা সালাতের উদ্দেশে দন্ডায়মান হও তখন (সালাতের পূর্বে) তোমাদের মুখমন্ডল ধৌত কর এবং হাতগুলিকে কনুই পর্যন্ত ধুয়ে নাও, আর মাথা মাসাহ কর এবং পা’গুলিকে টাখনু পর্যন্ত ধুয়ে ফেল। যদি তোমরা অপবিত্র হও তাহলে গোসল করে সমস্ত শরীর পবিত্র করে নাও। কিন্তু যদি রোগগ্রস্ত হও কিংবা সফরে থাক অথবা তোমাদের কেহ পায়খানা হতে ফিরে আস কিংবা তোমরা স্ত্রীদেরকে স্পর্শ কর (স্ত্রী-সহবাস কর), অতঃপর পানি না পাও তাহলে পবিত্র মাটি দ্বারা তায়াম্মুম করে নাও, তখন তোমরা তা দ্বারা তোমাদের মুখমন্ডল ও হাত মাসাহ কর, আল্লাহ তোমাদের উপর কোন সংকীর্ণতা আনয়ন করতে চাননা, বরং তিনি তোমাদেরকে পবিত্র করতে ও তোমাদের উপর স্বীয় নি‘আমাত পূর্ণ করতে চান, যেন তোমরা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ কর।
(সূরা মায়িদাহ - 6 )

2 - হযরত আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত। নিশ্চয় রাসুল (সা.) ইরশাদ করেছেন, শরীর থেকে যা কিছু বের হয়, তার কারণে অজু ভেঙে যায়। (সুনানে কুবরা লিলবায়হাকি - ৫৬৮)



2 - শরীর থেকে রক্ত, পূঁজ, বা পানি বের হলে।

দলিল:

1- হযরত আব্দুল্লাহ বিন উমর (রা.)-এর যখন নাক দিয়ে রক্ত ঝড়তো, তখন তিনি ফিরে গিয়ে অজু করে নিতেন। [মুয়াত্তা মালিক-১১০]


3 - বমি করা ।

দলিল :

1 - হযরত আয়শা (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুল (সা.) ইরশাদ করেছেন, যে ব্যক্তির বমি হয়, অথবা নাক দিয়ে রক্ত ঝরে, বা মজি (সহবারের আগে বের হওয়া সাদা পানি) বের হয়, তাহলে ফিরে গিয়ে অজু করে নিবে। (সুনানে ইবনে মাজাহ - ১২২১)

4 - থুথুর সঙ্গে রক্ত সমান বা বেশি পরা।

দলিল :

1- হাসান বসরি (রহ.) বলেন, যে ব্যক্তি তার থুথুতে রক্ত দেখে তাহলে থুথুতে রক্ত প্রবল না হলে তার ওপর অজু করা আবশ্যক হয় না। (মুসান্নাফ ইবনে আবি শাইবা, হাদিস নং-১৩৩০)

5- চিৎ বা কাত হয়ে হেলান দিয়ে ঘুমাালে।

দলিল : 

1 - হযরত ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত। রাসুল (সা.) ইরশাদ করেছেন, সিজদা অবস্থায় ঘুমালে অজু ভঙ্গ হয় না, তবে চিৎ হয়ে শুয়ে পড়লে ভেঙ্গে যাবে, কেননা চিৎ বা কাৎ হয়ে শুয়ে পড়লে শরীর ঢিলে হয়ে যায়। (মুসনাদে আহমাদ - ২৩১৫, সুনানে আবু দাউদ -২০২)

6 - পাগল, মাতাল বা অচেতন হলে।

দলিল: 

1- হযরত হাম্মাদ (রহ.) বলেন, যখন পাগল ব্যক্তি সুস্থ্ হয়, তখন নামাজের জন্য তার অজু করতে হবে। (মুসান্নাফ আব্দুর রাজ্জাক - ৪৯৩)


7 - নামাজে উচ্চস্বরে হাসি দিলে।

দলিল:

1- হযরত ইমরান বিন হুসাইন (রা.) থেকে বর্ণিত। রাসুল (সা.) ইরশাদ করেছেন, যে ব্যক্তি নামাজে উচ্চস্বরে হাসে, সে ব্যক্তি অজু ও নামাজ পুনরায় আদায় করবে। হযরত হাসান বিন কুতাইবা (রহ.) বলেন, যখন কোনো ব্যক্তি উচ্চস্বরে হাসি দেয়, সে ব্যক্তি অজু ও নামাজ পুনরায় আদায় করবে। (সুনানে দারা কুতনি - ৬১২)

আশাকরি বুঝতে পেরেছেন।

শেয়ার করে অন্যদের জানাতে ভুলবেন না।