জেনে নিন : জানাজার নামাজের সঠিক নিয়ম ?

আমাদের কোন পরিবারের সদস্য বা কাছের কোন মানুষ মারা যদি মারা যায় তখন আমরা জানাজার নামাজ পড়ে তাকে দাফন করি। এই জানাজার নামাজের জন্য তাই আমরা কোন ভালো হুজুর বা আলেমকে নিয়োগ দেই। কারন আমরা মনে করি জানাজার নামাজ অনেক কঠিন। সাধারণ মানুষ এই নামাজ পড়াতে পাড়বে না। এই চিন্তা একদম ভুল ।

সবচেয়ে উত্তম হচ্ছে নিজের পরিজনদের জানাজার নামাজ নিজে পড়ানো। তবে আমরা জানি না জানাজার নামাজ কিভাবে পড়তে হয়। চলুন তাহলে জেনে নেই এই সম্পর্কে ।

প্রথমত জানাজার নামাজ হচ্ছে ফরজে কিফায়া। এবং এই নামাজ ৪ তাকবীর এর সাথে পড়তে হয়।

জানাজার নামাজ শুরু করার জন্য সর্বপ্রথম নিয়ত করতে হয়। তবে নিয়ত কখনো মুখে উচ্চারণ করা যাবে না । এটি অন্তরে করতে হয়।

এর পর নামাজ শুরু করতে হবে।

১ম তাকবীর:

প্রথম তারাবীর এর পড় সূরা ফাতিহা অথবা সানা পাঠ করতে হবে। এই বিষয়ে 2 টি মতামত আছে। 

সূরা ফাতিহা সম্পর্কে হাদিসে উল্লিখিত এই যে,

 আব্দুল্লাহ বিন আউস (রা:) তিনি আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাসকে এক ব্যক্তির জানাজার নামাজ পড়ার সময় দেখেছেন তিনি ফাতিহা সূরা পাঠ করেছেন । পরে তাকে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন এটি সুন্নাহ ।(সহীহ বুখারি - ১৩৩৫)

সানা পাঠ  সম্পর্কে হাদিসে উল্লিখিত এই যে,

হযরত আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত যে, তিনি উবাদা ইবনে ছামিত রা.-কে জানাযার নামায সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলেন, তিনি বললেন, আল্লাহর কসম! অবশ্যই আমি তোমাকে বলব, তুমি সর্বপ্রথম তাকবীর দিয়ে নামায শুরু করবে। অতপর নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর উপর দরূদ পড়বে এবং এই দুআ পড়বে।
(সুনানে কুবরা বায়হাকী ৪/৪০)

তবে যেকোনো একটি পড়লেই হবে। কিন্তু বেশিরভাগ ওলামায়ে কেরামদের মতে সূরা ফাতিহা পাঠ করা উচিত । কারন সকল নামাজ পড়ার হ্মেত্রে সূরা ফাতিহা পাঠ করতে হয় । তাই সূরা ফাতিহা পাঠ করা উচিত ।

২য় তাকবীর :

এই তাকবীর দেয়ার পর দূরুদ পাঠ করতে হয়।
অর্থাৎ দূরুদে ইব্রাহিম।

উচ্চারনঃ আল্লাহুম্মা সাল্লিআলা মুহাম্মাদিঁ ওয়া আলা আলি মুম্মাদিন কামা সাল্লাইতা আলা ইব্রাহীমা ওয়া আলা আলি ইব্রাহীমা ইন্নাকা হামিদুম্মাজীদ। আল্লাহুম্মা বারিক আলা মুহাম্মাদিঁ ওয়া আলা আলি মুহাম্মাদিন কামা বারাকতা আলা ইব্রাহীমা ওয়া আলা আলি ইব্রাহীমা ইন্নাকা হামীদুম্মাজীদ।
অনুবাদঃ যে আল্লাহ! মুহাম্মদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এবং তাঁহার বংশধরগণের উপর ঐরূপ আশীর্বাদ অবতীর্ণ কর যেইরূপ আর্শীবাদ হযরত ইব্রাহিম (আঃ) এবং তাঁহার বংশধরগণের উপর অবতীর্ণ করিয়াছ। নিশ্চয়ই তুমি প্রশংসা ভাজন এবং মহামহিম। হে আল্লাহ! মুহাম্মদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এবং তাঁহার বংশধরগণের উপর সেইরূপ অনুগ্রহ কর যে রূপ অনুগ্রহ ইব্রাহীম (আঃ) এবং তাঁহার বংশরগণের উপর করিয়াছ। নিশ্চয়ই তুমি প্রশংসা ভাজন এবং মহিমাময়।

৩য় তাকবীর :
এই তাকবীর এর পর যেই দোয়াটি পাঠ করতে হয় তা হচ্ছে ;
উচ্চারণ : ‘আল্লাহুম্মাগফিরলি হাইয়্যিনা ওয়া মাইয়্যিতিনা ওয়া শাহিদিনা ওয়া গায়িবিনা ওয়া সগিরিনা ওয়া কাবিরিনা ওয়া জাকারিনা ওয়া উংছানা। আল্লাহুম্মা মান আহ্‌ইয়াইতাহু মিন্না ফাআহ্‌য়িহি আ’লাল ইসলাম। ওয়া মাং তাওয়াফ্‌ফাইতাহু মিন্না ফাতাওয়াফ্‌ফাহু আ’লাল ঈমান। আল্লাহুম্মা লা তাহরিমনা আঝরাহ ওয়া লা তুদিল্লানা বাআ’দা।’ (মুসনাদে আহমাদ, তিরমিজি, আবু দাউদ, ইবনে মাজাহ, মিশকাত)

৪র্থ তাকবীর  :

সালাম ফেরাতে হয়।


এই হলো সঠিক পদ্ধতিতে জানাজার নামাজের নিয়ম। 

আশাকরি বুঝতে পেরেছেন ।

শেয়ার করে অন্যদের জানাতে ভুলবেন না ।