জেনে নিন: শবে বরাত কি বিদাত ?

শবে বরাত নিয়ে আমাদের দেশ সহ এই উপমহাদেশে অনেক তর্ক বিতর্ক রয়েছে। এক শ্রেণীর ওলামায়ে কেরামদের মতে শবে বরাত পালন করা উচিত। অন্যদিকে আরেক শ্রেণীর ওলামায়ে কেরামদের মতে এটি পালন করা বিদাত।

এখন সাধারণ মানুষ কি করবে। আসল সমস্যা কোথায়। শবে বরাত পালন করা কি বিদাত না উত্তম ?

প্রথমত শবে বরাত শব্দটি ফার্সি শব্দ। এর অর্থ হচ্ছে শব = রাত , বারাআত = নাজাত। অর্থাৎ যেই রাতে নাযাত দেয়া হয়। এই মর্মে আমাদের একটি পোস্ট আছে দেখে নিবেন।

শবে বরাত সম্পর্কে যেই হাদিস গুলো রয়েছে :

হযরত আলী ইবনে আবু তালেব (রা.) থেকে বর্ণিত, মহানবী (স.) বলেছেন, ‘শাবানের ১৪ তারিখ দিবাগত রাত যখন আসে তখন তোমরা এ রাতটি ইবাদত-বন্দেগিতে কাটাও এবং দিনের বেলা রোজা রাখ। কেননা, এ রাতে মহান আল্লাহ প্রথম আসমানে আসেন এবং বলেন, কোন ক্ষমাপ্রার্থী আছে কি? আমি তাকে ক্ষমা করব। আছে কি কোন রিজিক প্রার্থী? আমি তাকে রিজিক দিব। আছে কোন অসুস্থ বা বিপদগ্রস্ত ব্যক্তি? যাকে আমি সুস্থতা দান করব ও বালা মুসিবত থেকে মুক্তি দেব। এভাবে সুবেহ সাদিক পর্যন্ত মহান আল্লাহ মানুষের প্রয়োজনের কথা বলে তাদের ডাকতে থাকেন।’ (সুনানে ইবনে মাজা, হাদীস ১৩৮৪)

অন্য আরেকটি হাদিসে এসেছে যে ,

হযরত আয়েশা সিদ্দীকা (রা.) বলেন, এক রাতে আমি মহানবী (সা.)-কে কাছে না পেয়ে তাঁর খোঁজে বের হলাম এবং জান্নাতুল বাকীতে তাঁকে পেলাম। তিনি বললেন- হে আয়েশা! তুমি কি আশঙ্কা করছ যে, আল্লাহ এবং তাঁর রাসুল তোমার প্রতি কোন অত্যাচার করবেন? আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসুল! আমার এ ধারণা হয়েছিল যে, আপনি হয়তো অন্য কোন স্ত্রীর কাছে গমন করেছেন। এরপর মহানবী (স.) ইরশাদ করেন- এই রাতে মহান আল্লাহ দুনিয়ার নিকটবর্তী আসমানে অবতরণ করেন এবং বনু কালব গোত্রের লোকদের ছাগল পালের পশমের সংখ্যার চেয়েও অধিক সংখ্যক লোককে ক্ষমা করে দেন। (তিরমিযী, ইববে মাজাহ, জামেউল উসূল)।

তবে শবে বরাতে ইবাদাত সম্পর্কে যেই হাদিস গুলো রয়েছে  সেই  হাদিস গুলোকে বেশিরভাগ ওলামায়ে কেরাম যয়ীফ বলেছেন।

শবে বরাত আরবের বেশিরভাগ দেশে পালন করা হয় না। তবে এই মাসের প্রতিটি রাতে ইবাদাত করা যেতে পারে। শবে বরাতকে নির্দিষ্ট করে ফেলা ঠিক নয়। সবচেয়ে উত্তম রাতঁ হচ্ছে শবে কদরের রাতঁ।

আশাকরি বুঝতে পেরেছেন।

শেয়ার করে অন্যদের জানাতে ভুলবেন না।